নীলফামারীর পরিত্যক্ত কলার গাছ কচুরীপানা থেকে বছরে ২০ কোটি টাকা আয়
কলা গাছ থেকে শিল্প |
পরিত্যক্ত কলার গাছ, কচুরী পানা, থেকে বছরে ২০ কোটি টাকা আয় করছেন ইকো সাপ্লাইজ নীলফামারী প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির নাম ইকো সাপ্লাইজ নীলফামারী (ই এস এন)। প্রতিষ্ঠানটি নীলফামারী শহড় থেকে ১০ কিলোমিটার উত্তরে। নীলফামারী সদর উপজেলার লক্ষীচাপ ইউনিয়নের শিশাতলী গ্রামে। প্রতিষ্ঠানটি ২০১১ সাল থেকে চুক্তিভিত্তিক ৩ একর জমির উপড়ে অবস্থিত। সেখানে প্রতিদিন আশি জন পুরুষ ও মহিলা শ্রমিক কাজ করে থাকেন। তাদের দৈনন্দিন মাথাপিছু মুজুরী দেওয়া হয় ২৪৯ টাকা। শ্রমিক অনিতা রাণী, বিষ্ট রায় অভিযোগ করে বলেন, আমাদের এই বেতনে পরিবার চালাতে হিমশিমে পরতে হয়।
আমরা বিপদে পরে জীবন বাঁচার তাগিদে এখানে
কাজ করে থাকি। এই প্রতিষ্ঠানটি বছরে কোটি কোটি টাকা আয় করেন আর আমাদের
শ্রমিকের মুজুরী দিতে তাদের কৃপনতা। আমাদের মুজুরী বৃদ্ধির জন্য সরকারের
দৃষ্টি কামনা করি। নির্যন গ্রামের মাঝে অবস্থিত ওই অফিসের কাজ হলো কাঁচামাল
সংগ্রহ করা। তাদের শ্রমিকেরা দৈনন্দিন রাত পোহালেই হাতে দা, কুড়াল,দেশীয়
অস্ত্র নিয়ে আশপাশের কয়েকটি ইউনিয়নের গ্রামগঞ্জের ঝোঁপঝাড় থেকে পড়ে যাওয়া,
হেলে পড়া, ফল খেয়ে পরিত্যক্ত ও অবহেলিত কলার গাছের চোটা বা খোল ঢাকুনা
সংগ্রহ করেন শ্রমিকেরা।
আর গ্রামের পুকুর, খাল, বিল, নদী, নালা,
ডোবার ভাসমান কচুরীপানা ও বাঁশ সংগ্রহ করে শ্রমিকেরা প্রতিদিন নিয়ে আসেন
নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানে। সেখানে রক্ষিত হয় কাঁচামাল হিসেবে। সেগুলো
নির্দিষ্ট পরিমানে কেটে, রোদে শুকিয়ে, প্রসেসিং করে গুদামজাত করে রাখা হয়।
সেগুলোর নাম দেয়া হয়েছে বেম্বী ষ্টিপস, বেম্বু কোয়াটার লং, বেম্বু কোয়াটার
শর্ট,
পোষ্ট ইষ্টিপস। সেগুলো গুদামজাতের পর
প্রয়োজনমতো পাঠিয়ে দেওয়া হয় নীলফামারী উত্তরা ইপিজেডে। উত্তরা ইপিজেডে
ওয়েসিস ট্রান্সফরমেশন লিমিটেড নামের একটি শিল্প রয়েছে। সেখানে কর্মচারী
রয়েছেন প্রায় এক শত সত্তুর জন। এই কাঁচামাল থেকে বিদেশে রপ্তানির মৃত্যু
ব্যক্তির কফিন তৈরী করা হয়। সেই কফিনগুলি বিশ্বের কয়েকটি দেশে রপ্তানি হয়ে
থাকে। দেশগুলি হলো ইংল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, হল্যান্ড, ইউ এস এ। যা থেকে
বছরে আয় হয়ে থাকে ২০ কোটি টাকা। ইকো সাপ্লাইজ নীলফামারী লক্ষীচাপ শিশাতলীর
অফিস ইনচার্জ দেলোয়ার হোসেন বলেন, গ্রামের প্রতন্ত অঞ্চল থেকে কফিন তৈরীর
জন্য পরিত্যক্ত কলারগাছ, কচুরীপানা, কিছু কাঞ্চন ফুল, কিছু বাঁশ সংগ্রহ করে
থাকি। এসব সংগ্রহ করতে আমাদের তেমন অর্থ ব্যয় হয়না। শুধু বাঁশ ক্রয় করতে
হয়।
ইপিজেড ওয়েসিস ট্রান্সফরমেশন লিমিটেডের
সাপ্লাই চেইন কমার্শিয়াল ম্যানেজার এলেন ফেইত ফুলের সাথে গত মঙ্গলবার
সরেজমিনে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা বেকারের কর্মসংস্থান, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য
রক্ষা,পাশাপাশি বৈদেশিক আয়ের জন্য প্রতিষ্ঠানটি চালিয়ে যাচ্ছি। এখান থেকে
বছরে আমাদের ২০ কোটি টাকা আয় হয়ে থাকে। ইপিজেড ওয়েসিস ট্রান্সফরমেশন
লিমিটেডের জিএম ইভান্স হালদারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন,পরিত্যক্ত কলার
গাছ, কচুরী পানা, বাঁশ, ফুল থেকে প্রসেসিং করে কাঁচামাল সংগ্রহ করে কফিন
তৈরী করে থাকি। কফিনগুলো বিদেশে রপ্তানি হয়।
No comments
Thanks for your comments .